উদ্ধারকৃত কলেজ ছাত্র অর্ণব আচার্য্য হবিগঞ্জ সদর উপজেলার রিচি গ্রামের আইড়া কোনা এলাকার বাসিন্দা ডা. গোপাল আচার্য্যের পুত্র। সে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট কলেজের ছাত্র।
নিজস্ব প্রতিনিধি : একটা সময় রাজধানী ঢাকায় ‘কিশোর গ্যাং’য়ের কথা শুনা গেলেও এখন খোদ হবিগঞ্জেও গড়ে উঠেছে ‘কিশোর গ্যাং’। আর এসব কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের পরিচালনা করছে পাড়া মহল্লা ভিত্তিক তাদের বড় ভাইয়েরা। বড় ভাইদের নির্দেশে এমন কোন কাজ নেই যা তারা করতে পারে না। এমতাবস্থায় দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে হবিগঞ্জ শহরের ‘কিশোর গ্যাং’। যাদের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে পাড়া মহল্লা ভিত্তিক নিজেরদের আধিপত্য বিস্তার করা। ফলে নতুন করে গড়ে উঠা এই গ্যাংটি শহরের সাধারণ মানুষদের মধ্যে আতংকের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে।
জানা যায়, কিশোর বয়সে হিরোইজমের চিন্তা-ভাবনা থেকেই গ্যাং কালচার গড়ে উঠছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শহরের তিনকোনা পুকুরপাড় এলাকায় এক কলেজ ছাত্রকে অপহরণের সময় আন্তঃজেলা কিশোর গ্যাংয়ের ৪ সদস্যকে আটক করেছে সদর থানা পুলিশ। এসময় উদ্ধার করা হয় ভিকটিমকে।
উদ্ধারকৃত কলেজ ছাত্র অর্ণব আচার্য্য হবিগঞ্জ সদর উপজেলার রিচি গ্রামের আইড়া কোনা এলাকার বাসিন্দা ডা. গোপাল আচার্য্যের পুত্র। সে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট কলেজের ছাত্র।
আটককৃতরা হল, আন্তঃজেলা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য শহরের চিরাকান্দি এলাকার বাসিন্দা অসীম কুমার দাশের পুত্র অনুপম কুমার দাস (১৭), সুখচর গ্রামের বাসিন্দা ধীরেন্দ্র দাসের পুত্র দৃশ্য দাস (১৯), শহরতলীর উমেদনগর গ্রামের যশো রায়ের পুত্র তপু রায় (১৭), শহরের বাণিজ্যিক এলাকার সুদিপ বণিকের পুত্র জয় বণিক (১৭)।
ভিকটিম অর্ণব আচার্য্য জানায়, আটককৃতরা তার বন্ধু। বেশ কিছুদিন পুর্বে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে ছবি তোলা নিয়ে তাদের সাথে কথা কাটাকাটি হয়েছিল তার। পরে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধানও করা হয়। বৃহস্পতিবার সে হবিগঞ্জ শহরের কলাপাতা রেস্টুরেন্টের সামন থেকে বাড়ি যাওয়ার জন্য দাড়িয়েছিল। এসময় উল্লেখিতরা তাকে মারধোর করে একটি টমটমে তুলে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। টমটমটি তিনকোনা এলাকায় পৌছলে তার চিৎকার শুণে আশাপাশের লোকজনের সন্দেহ হয়।
এছাড়াও ডিবির এসআই আজাদুর রহমান ঘটনাচক্রে সেখানে থাকলে তিনি বিষয়টি সাথে সাথে সদর থানাকে অবগত করেন। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক এসআই হারুন আল রশিদের নেতৃত্বে একদল পুলিশ কিশোর গ্যাংয়ের ৪ সদস্যকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার (ওসি) তদন্ত দৌস মোহাম্মদ জানান- বিষয়টি পুলিশ গভীর ভাবে খতিয়ে দেখছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এদিকে হবিগঞ্জের সচেতন মহল মনে করছেন, শহরে কিশোর গ্যাংয়ের নতুন করে গজিয়ে উঠা একটি অশনি সংকেত। তাই পারিবারিক মূল্যবোধের পাশাপাশি নিজেদের ছেলেদের প্রতি পিতামাতাকে আরো দায়িত্বশীল হতে হবে। এছাড়াও যারা ইতিমধ্যে আপরাধে জড়িয়ে পড়ছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে।